স্বদেশ ডেস্ক: রপ্তানি আয়ে কালো ছায়া পড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি কমেছে ১৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসের পর অক্টোবরের পতনের ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানির পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমেছে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। এই চারমাসে রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ২৭২ কোটি ডলারের পণ্য। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ দশমিক ২১ শতাংশ কম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। অক্টোবর মাসে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে পারেনি দেশের তৈরি পোশাক খাত। চলতি অর্থবছরের চার মাসে ১ হাজার ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ কম। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ কম।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি রুবানা হক বলেন, পোশাক রপ্তানি টানা কমছে, আগামীতে আরও কমবে। কারণ এখন বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু আগের চেয়ে অর্ডার কমেছে, পাশাপাশি মূল্যও কম পাচ্ছি। প্রতিযোগী দেশ ভারত, ভিয়েতনাম সরকার পোশাকে নগদ সহায়তা দিচ্ছে, কিন্তু আমরা সে অনুসারে কোনো সহায়তা পাচ্ছি না। এজন্য রপ্তানিতে পিছিয়ে যাচ্ছি। আগামীতে আরও কঠিন সময় আসছে। এ বিষয়গুলো বিবেচনা নিয়ে সরকারকে এ খাতে নগদ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানান তিনি। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত চার মাসে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৫৫৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ কম। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ। অন্যদিকে ওভেন পোশাক রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৫০৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ কম। পাশাপাশি ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ওভেনে। অক্টোবরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩০৭ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছর পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি ডলার। জুলাই-অক্টোবর সময়ে ১ হাজার ৪৩২ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১ হাজার ২৭২ কোটি ডলার। এটি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১ দশমিক ২১ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একইসময়ে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৩৬৫ কোটি ডলার। অর্থাৎ, চার মাসে প্রবৃদ্ধি কমেছে ২ দশমিক ৮২ শতাংশ।
জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩১ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের চার মাসে ৮ দশমিক ২ শতাংশ কম প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে। এ খাত থেকে আয় এসেছে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। চার মাসে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ কম। এই সময়ে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও লক্ষ্য ছুঁতে পারেনি হোম টেক্সটাইল।